এস এস সি পাসের পর কী করব? কী পড়ব? একাদশ শ্রেণি উচ্চ মাধ্যমিকে HSC College Admission কোথায় ভর্তি হব?
আমরা যখন ক্লাস সিক্সে পড়তাম, তখন কেউ যদি প্রশ্ন করত-কোন ক্লাসে পড়ো? আমরা সহজেই উত্তর দিতাম, ক্লাস সিক্সে পড়ি। কিন্ত এসএসসি পাস করার পর শিক্ষার্থীরা যখন কলেজে ভর্তি হয়। অতঃপর ক্লাস করে, তাদের আমি ক্লাসে জিজ্ঞাসা করেছি। তোমরা কোন ক্লাসে পড়ো? গুটি কয়েক শিক্ষার্থী উত্তরে বলে, স্যার ইন্টারে পড়ি!!! আর যারা নিজেদের বেশী চালাক মনে করে, তারা চুপচাপ থাকে। আমি অবশ্য চুপচাপ থাকাদের খুব বেশী একটা পজেটিভ মনে করি না। কেননা, কোন বিষয়ে আমার ধারনা না থাকতে পারে। এটিই স্বাভাবিক। কিন্ত প্রশ্ন না করা টা অস্বাভাবিক।
HSC Admission College for you.
ইন্টারে পড়াদের অনেকেই আবার দ্বিধা বিভক্তে ভুগে থাকে। কেননা, কেউ মানবিক শাখা, কেউ আবার কমার্স শাখা (যদিও এটি ব্যবসায় শিক্ষা শাখা), কেউ আবার বিজ্ঞান শাখায় পড়ে। বন্ধুদের অনেকেই আবার পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি হচ্ছে। আবার অনেকেই মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্টে ভর্তি হওয়ার অপেক্ষায় আছে। অনেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। কী করবে তারা? যারা আইএ অর্থ্যাৎ ইন্টারমিডিয়েট অব আর্টসে পড়ছে তারা দুই বছর পড়াশোনার পর উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড পরীক্ষায় বসবে; এখানে অর্থ্যাৎ কলেজে আবার ভর্তির প্রথম বছরকে বলা হয় ফার্স্ট ইয়ার। পরের বছরকে বলা হয়, সেকেন্ড ইয়ার। তারপর বোর্ড ফাইনাল পরীক্ষা। অবশ্য আইসিটি বিষয় ছাড়া প্রত্যেক বিষয়ের প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্র পড়তে হয় উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে; এমনকি গণিত বিষয়েরও। গণিত অবশ্য এখানে চতুর্থ বিষয়। কোন শিক্ষার্থী চাইলে নাও পড়তে পারে। এক্ষেত্রে আমার ব্যক্তিগত অভিমত, যারা আইএসসি অর্থ্যাৎ ইন্টারমিডিয়েট অব সাইন্সে পড়বে তাদের অবশ্যই গণিত পড়া উচিৎ।
College Admission Guideline
অনেকেই মনে করে, আমি তো ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ব না। আমাকে কেন গণিত পড়তে হবে? প্রথম কথা হলো, গণিতই একমাত্র বিষয় যার মুখস্থ করার কিছুই নাই; যা কিছু এক্সপ্লোর করার সুযোগ এই গণিতেই আছে। তাছাড়া পরীক্ষা দিয়ে কত মার্ক পাবে, তা হুবহু পরিক্ষার হলে বসেই বলে দেয়া যায়। দ্বিতীয় বিষয় হল: উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে যারা বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে চাই, তাদের আবশ্যিক বিষয়ের মধ্যে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন পড়তে হয়। এই পদার্থবিজ্ঞানের সকল প্রশ্নের উত্তরই গাণিতিক সমাধানের মাধ্যমে করতে হয়। এমনকি এখানে রয়েছে ক্যালকুলাস। যা উচ্চ মাধ্যমিক বা একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সাধারণ গণিতেও রয়েছে। তৃতীয়ত পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান যদি বিজ্ঞান হয়, এই বিজ্ঞানের মা হলো, গণিত। গণিত ছাড়া বিজ্ঞানের কোন রাশিই প্রকাশ করা যায় না। এমন কি দৈনন্দিন হিসাব নিকাশ ও করা যায় না। মনে করো, তোমার জ্বর হয়েছে!!!
Super Tip For College Admission
তাহলে তোমাকে আগে ফাইন্ড আউট করতে হবে কত জ্বর হয়েছে? ১০০ ডিগ্রি নাকি ১০১ ডিগ্রি। এগুলো কিন্তু অংক। আবার এর বিপরীতে তোমাকে ওষুধ খেতে হবে। কতটুকু মাত্রার ওষুধ, দিনে কতবার খেতে হবে? সব অংক। যায় হোক বড় সমস্যা হলো, তুমি উচ্চ মাধ্যমিকে গণিত চতুর্থ বিষয় হিসেবে পড়েছ, চতুর্থ বিষয়ে ফেল করলে ফেল নাই। অন্য বিষয়গুলোতে পাশ করলেই তুমি পাশ। সমস্যা হলো, তুমি যখন অনার্স পড়তে যাবে। গণিতে কাম্য সংখ্যক জিপিএ না থাকায় তুমি গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান এমন অনেক বিষয় আছে যেখানে আবেদন করতে পারবে না। সাইন্স পড়ে গণিত ভালো করে না পড়ে এখন ঠ্যালা বোঝ!!! আর হ্যাঁ আর এক গ্রুপ আছে কমার্সে। না, তা ঠিক নয় এদের বিজনেস স্টাডিজ বলে বা ব্যবসায় শিক্ষা শাখা। এই গ্রুপের আরেক নাম, আইবিএস। লেখা পড়া শেষে এরাই শুধু ব্যবসা বাণিজ্য বা ব্যাংকে চাকরি করবে এমন নয়। যারা বিজ্ঞান বা মানবিক শাখায় পড়েছে তারাও ব্যাংকার হতে পারে।
HSC Best College Admission in this year
এদিকে যারা পলিটেকনিক বা প্যারামেডিকেলে (মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট) পড়ে তাদের চার বছর পড়তে হবে। যারা আরো পড়তে চাই, তাদের বিএসসি পড়ার সুযোগ আছে। আবার তারা চাইলে চারবছরের মাথায় ভালো চাকরিতেও যোগ দিতে পারে। ইন্টার্নই করার সময় যারা নিজেদের যোগ্য ও ক্রিয়েটিভ প্রমাণ করতে পারে, তাদের ধরে কে? অনেকে সাইন্স পড়ে দুইবার ফেল করে পরে রাস্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স পড়ে। আমি এক্ষেত্রে বলব, তুমি এই টার্গেটটি আরো চারবছর আগে ঠিক করলে এতদিনে তোমার অনার্স পড়া কমপ্লিট হয়ে যেত।

আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, তুমি সিএসই পড় আর বিবিএ পড়ো, এইটা বড় কথা নয় !!! বড় কথা হলো, এইটা পড়ে তুমি ব্যক্তি জীবনে তা প্রয়োগ করতে পারো কি না? সিএসই পড়ার সময় তোমার তৈরি কোন অ্যাপ্স আছে কি না? যা অন্যের ব্যবহারে লাগে। বিবিএ পড়ার সময় তুমি কোন সফটওয়্যার তৈরি করেছ কি না, যা বড় প্রতিষ্ঠানের হিসাব নিকাশকে সহজ করে দেয়। তুমি রাষ্ট্র বিজ্ঞানে পড়াকালীন কোন ঘটনাকে সুন্দর করে ব্যাখ্যা করতে পারো কিনা? সুন্দর করে চিত্তাকর্ষকভাবে উপস্থাপন করতে পারো কিনা? এইটাই মুখ্য। কোন বিষয়ে পড়ো, তা মুখ্য বিষয় নয়। তুমি যদি ভালো ফুটবল খেলে থাকো, তাহলে বিকেএসপিতে ভর্তি হতে পারো। যদি তোমার কন্ঠ ভরাট হয়ে থাকে, তোমার গলায় আঁশ না থাকে, তুমি কথা বললে বাঁশির মত শব্দ হয়, তুমি বাবা শিল্প কলায় যোগাযোগ রাখতে পারো। তোমার জন্য বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের দুয়ার খোলা আছে।
College Admission
যায় হোক, উচ্চ মাধ্যমিকের দুই বছর শেষে তোমাকে নামতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার যুদ্ধে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি নেবে, সেখানে পঞ্চাশ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে। জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার প্রথম পর্বের শুরু। তোমার নিশানা ঠিক থাকলে এগুলো কিছুই নয়। আবার যারা মনে করো, শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিবে, তোমার এক জীবনে হাজারও জীবনের সাথে পরিচয় হবে। তুমি টিকে থাকবে তোমার শিক্ষার্থীর জীবনের মাঝে। তাহলে তুমি অনার্স শেষে এক বছরের জন্য বি এড ডিগ্রিটি নিয়ে নিতে পারো। এটি শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক বিভিন্ন বিষয় বোঝার ক্ষেত্রে ও শিখন শিক্ষণ কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করতে এই কোর্সটি বিশেষ ভূমিকা রাখে। দেশের সকল টিচার্স ট্রেনিং কলেজে এক বছরের বিএড বা ব্যাচেলর অব এডুকেশন ডিগ্রি কোর্স চালু আছে। তুমি চাইলে এখানে চার বছরের জন্য অনার্স ডিগ্রিটিও এখান থেকে নিতে পারো।
Admission
মনে রাখো, জীবনে ভালো কিছু করলে তোমার শিক্ষক গর্ব করে বলবেন, ও তো আমার ছাত্র। তোমার বাবা-মা গর্ব করে বলবেন, তুই তো আমাদের সন্তান। বাবা, মা, শিক্ষক, ভাই বোন, এলাকাবাসীকে কে না খুশি করতে চাই? আর যদি তুমি জীবন যুদ্ধে পরাজিত হও, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছো, কি কি তোমার অর্জন রয়েছে, তা কেউ দেখবে না। এমন কি তোমার ক্লোজ বন্ধুরা বলবে, ও ডাব্বা মারবে আমরা আগে থেকেই জানতাম! জীবন এমনই। একটি বিষয় মাথা থেকে কখনোই নামাবে না। তা হলো, ফুট প্রিন্ট বা পদ চিহ্ন। এই পৃথিবীতে এসেছ, তোমাকে ফুটপ্রিন্ট রাখতেই হবে। খেয়াল করে দেখো, পশু পাখি ফুটপ্রিন্ট রাখতে পারে না। তোমার দাদার গোয়ালে দুই বছর আগে কী রঙ এর গোরু ছিলো, তা কী বাড়ির কেউ মনে রেখেছে?
Admission
কারণ দরকার নাই । পুরো দায়িত্বটা তোমার কাঁধে। তুমি টের পাও নি। এই পৃথিবীতে তুমি ফুট প্রিন্ট বা তোমার পায়ের চিহ্ন রাখতে পারলেই তোমার বাপের নাম থাকবে। তুমি তো জানো, বেগম রোকেয়ার বাবার নাম জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের। কাজী নজরুলের বাবার নাম কাজী ফকির আহমদ, রবীন্দ্রনাথের বাবার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাহলে বুঝে নাও, তাঁরা কীভাবে দুনিয়ায় ফুট প্রিন্ট রেখেছেন। তোমার এই উচ্চ মাধ্যমিকের ভর্তি শুধু একটি পরীক্ষা পাশের জন্যই নয়। বরং এটি তোমার পরবর্তী জীবনের একটি সিঁড়ি। যে সিঁড়ি বেয়ে তুমি তোমার জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। পরিশ্রম তোমাকে করতেই হবে। জীবনে ভালো কিছু করার বা ভালো কিছু হওয়ার শর্টকার্ট কোন রাস্তা নাই। আর হ্যাঁ, তোমরা যারা এ বছর এস এসসি পাশ করলে তোমাদের ক্লাস অনলাইনে হবে। আমি যতটুকু জানি করোনা পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেও পুরো পৃথিবী সুস্থ্য হতে বেশ সময় লাগবে। আমাদের আগের মত স্বাভাবিক ঘুরাঘুরি করতে ইতস্ত করবে।
এটাই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে বাড়ি থেকে বাইরে যত কম যাওয়া যাবে। আমাদের সুরক্ষা আমরা তত বেশী নিশ্চিত করতে পারব।আমরা আমাদের জীবনকে গতিশীল রাখার জন্য অনলাইনের সুবিধা নিতে পারি। ভর্তি বা চাকরির জন্য একটি বিষয়কে অধিক গুরুত্বের সাথে মাথায় রাখো, কোন বিষয়ের নেগেটিভ খোঁজার আগে, বিকল্প খুঁজে দেখ। যদি বিকল্প অপশন না থাকে, তাহলে যেটি সামনে থাকবে সেটিই তোমাকে গ্রহণ করতে হবে। তোমাদের জন্য নিরন্তর শুভ কামনা। Please Comment This Topic Which you read HSC Admission for college.
উচ্চ মাধ্যমিক ভর্তি সংক্রান্ত যে কোন তথ্যের জন্য www.eduporto.com ওয়েব সাইটেই পাবে।