21st century teacher skills ২১ শতকের শিক্ষক হিসেবে যে দক্ষতাগুলো অবশ্যই থাকতে হবে
21st century teacher skills: আপনি কোন পেশায় যাবেন, তা নির্ভর করে আপনি কী ধরনের কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তবে অনেকে ছোটবেলা থেকেই চ্যালেঞ্জিং পেশায় যেতে যায়। পেশা এমনই হওয়া উচিৎ যেখানে চ্যালেঞ্জ থাকবে, থ্রিল থাকবে, সবাই একসাথে মজা করা যাবে, হৈচৈ করা যাবে। শিক্ষকতা এমনই একটি পেশা। এখানে প্রতি মূহুর্তই থ্রিল চলে। আপনার প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বয়সের মানুষ থাকবে। এক্কেবারে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে প্রবীণ পর্যন্ত। সবার সাথে আপনার সমন্বয়টা বেশ মজারই হবে। থ্রিলের কথা বলছিলাম বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষার রেজাল্টের দিন খুবই সজাগ থাকতে হয়। কে কেমন করবে ইত্যাদি। তবে যত দিন যাচ্ছে শিক্ষকতায় বিভিন্ন ইনোভেশন আসছে। পাঠদানের পদ্ধতি সহজ থেকে সহজতর হচ্ছে। সহজতর উপায় শিক্ষকগণ বের করছেন। সবাই সবার জায়গা থেকে সর্বোচ্চটুকে দেয়ার চেষ্টা করেন তাঁদের শিক্ষার্থীদের।
তবে প্রযুক্তির যুগে এখন এটি আরো চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। কারণ আপনার শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তি ব্যবহারে খুব দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করছে। এই সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীদের গাইড করতে ও আরো ফলপ্রসূ পাঠদানে আপনাকে অবশ্যই আরো সুদক্ষ হতে হবে।

এখানে কিছু টুলস ও দক্ষতার নাম উল্লেখ করা হল:
ভিডিও এডিটিং: এখন শিক্ষকতা পেশায় প্রয়োজনীয় দক্ষতার মধ্যে ভিডিও এডিটিং দক্ষতা খুব উঁচু স্তরে। কারণ অনলাইন ক্লাস নেয়া এখন নিয়মিত রুটিনে পরিণত হয়েছে। এই ক্লাসে অপ্রয়োজনীয় কথা বার্তা, অপ্রয়োজনীয় বডি ল্যাংগুয়েজ কেটে বাদ দিলে তা চিত্তাকর্ষক হবে তা সবারই জানা। আর যদি এর সাথে প্রয়োজনীয় ছবি বা কনটেন্ট যুক্ত করা যায় তাহলে তা আরো চিত্তাকর্ষক হবে। খুব কম সময়ে আপনি ভিডিও এডিটিং শিখে নিজের কাজ করতে পারেন। একইসাথে প্রফেশনাল হিসেবেও কাজ করতে পারেন।
পাওয়ার পয়েন্ট ব্যবহার:
শিক্ষকতা পেশায় অনেকেই আছেন যারা দীর্ঘদিন ধরেই পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে পাঠদান করে আসছেন। পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে আপনি কী না করতে পারেন? আপনি যা চিন্তা করতে পারেন, পাওয়ার পয়েন্ট দ্বারা তাই করা যায়।; আপনি যেভাবে চিন্তা করছেন, ঠিক সেভাবেই সবকিছু উপস্থাপন করা যায়।
ফটোশপ: পাওয়ার পয়েন্ট ব্যবহার করার সময় আপনার এমন মনে হতে পারে, আপনি যে ছবিটি খুঁজছেন তা গুগোলে বা কোন সার্ভারেই নাই। এমনটি হতেই পারে। ঠিক সে সময় আপনার ফটোশপ দক্ষতা থাকলে আপনি নিজেরমত বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউণ্ড পরিবর্তন করেও ছবি তৈরি করতে পারেন; । তা আপনার ক্লাসকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলতে পারে। নিজের ভাবনা নিজের মত করে ইমেজ আকারে প্রকাশ করতে ফটোশপের বিকল্প কমই আছে। আপনি চাইলেই খুব সহজেই খুব কম সময়ের মধ্যে ফটোশপ শিখতে পারেন।
ইলাস্ট্রেটর: যারা আকাআঁকি করতে চাই বা যাদের ঝোঁক আকাআঁকিতে প্রবল এমন শিক্ষার্থীদের গাইড করার জন্য শিক্ষক হিসেবে আপনার ইলাস্ট্রেটর শেখা ভীষণ দরকার। আপনি যদি জীববিজ্ঞানের শিক্ষক হন, তাহলে আপনার ক্লাসে আপনাকে কোষের ছবি দেখাতে হবে। শুধু কোষই নয়, এমন হাজারও বিষয় আছে যা প্রতি পিক্সেলে ভেঙে ভেঙে দেখাতে ইলাস্ট্রেটরের বিকল্প সফটওয়্যার খুবই কম আছে। যা আছে সেগুলো চড়া দাবে কিনতে হয়। ইলাস্ট্রেটর খুব চমৎকার থ্রি ডি ইফেক্ট তৈরি করতে পারে।
The 21st century teachers skills need to have
এক্সেল: শিক্ষার্থীর হাজিরা, দৈনন্দিন কাজের বিবরণ ও অ্যাকটিভিটি সংরক্ষণে এক্সেল খুব গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আপনি এক্সেল অপারেটিং করতে পারেন মানেই হলো, আপনার কাজের সময় দশগুণ বৃদ্ধি পাবে। আপনার হাতে সময় থাকবে। আপনি চাইলে আপনার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন কুয়েরি করতে পারেন খুব সহজেই। কুয়েরি হলো এমন একটি কমান্ড তা হলো: কোন গ্রামের, কোন ইউনিয়নের না কোন ওয়ার্ডের কতজন শিক্ষার্থী আপনার ক্লাসে পড়ে তা কুরেরির মাধ্যমে খুব সহজেই বের করা যায়। আপনি কুয়েরি করতে পারেন শুধু এক ক্লিকেই আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশেষ যোগ্যতার কতজন শিক্ষার্থী রয়েছে।
গুগোল ড্রাইভ: এটি তো মজার এক ইভেন্ট। আপনি মনে করেন, কোন দাপ্তরিক কাজে শিক্ষা বোর্ডে বা অন্য কোন জায়গায় গেছেন। এমন সময় আপনার কোন পেপার হঠাৎ প্রয়োজন হয়ে পড়ল।; তাহলে আপনি কী করবেন আবার বাড়ি এসে দুইদিন পর যাবেন? যদি এমন হয়, আপনার সমস্ত কাগজ পত্রাদি এমন কী আপনার প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত ব্যবহার হয় এমন কাগজ পত্রাদি সব সময় আপনার সাথেই থাকবে কিন্ত আপনাকে টেনে বয়ে বেড়াতে হবে না। তাহলে কেমন হয়? এটি অনেকটা আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপের মত।; শুণ্যে হাত বাড়িয়ে যখন চাইবেন-তখনই পাবেন। হ্যাঁ গুগোল ড্রাইভ এমনই; আপনার সমস্ত কাগজ পত্রাদি স্ক্যান করে আপনার জিমেইলে লগ ইন করে ড্রাইভে রেখে দেবেন। ব্যস হয়ে গেল। গুগোল ড্রাইভ ছাড়াও আপনি ওয়ান ড্রাইভও ব্যবহার করতে পারেন।
youtubing
ইউটিউবিং: বাংলাদেশে অনেক শিক্ষার্থী পাবেন যারা প্রফেশনাল ইউটিউবিং করে। আপনার ক্লাসগুলো যদি এমন হয় যে তা আগে থেকেই রেকোর্ডেড থাকবে।; শিক্ষার্থীরা তা বাড়ি থেকে দেখে আসবে ক্লাসে তাঁদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে । তাহলে কী অধিক চমৎকার হয় না? একটি একটি করতে করতে আপনার চ্যানেলে ভিডিওর পাহাড় তৈরি হবে। এটি আপনার প্রতিষ্ঠানের একটি সম্পদে পরিণত হবে।; যদিও এদেশের শিক্ষার্থীরা অনেক আগে থেকেই ইউটিউব ভিডিও দেখে নিজেরা পড়াশোনা করে।
গুগোল ক্লাসরুম: আপনাদের মনে আছে হয়ত ২০১৯ সালে যখন BTT Training হয়, তখন গুগল ক্লাস রুম ট্রেনিং এর পাঠ্য ছিলো। যদিও এটি অনেক থেকেই যাত্রা শুরু করেছে।; করোনা আমাদের সামনে নতুন করে গুগোল ক্লাসরুমের ব্যবহার অধিক মাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছে;
এটি এমনই একটি সিসটেম যার মাধ্যমে আপনি হোম ওয়ার্ক অ্যাসাইন করা যায়, হোম ওয়ার্কের সময় বেঁধে দেয়া যায়। যেগুলো আপনি ক্লাসের বাইরে অবসর সময়ে দেখতে পারেন; শিক্ষার্থীদের গ্রেডিং করতে পারেন। এক্ষেত্রে শুধু দরকার হয় শিক্ষার্থীদের ইমেইল অ্যাড্রেস।
Zoom
জুম অপারেট: আপনাকে জুম আইডি দেয়া হলে আপনি জুম মিটিং এ যোগদান করতে পারেন। খুব চমৎকার করে কথা বলতে পারেন, আবার ক্লাস ও নেন জুম ব্যবহার করে । কিন্ত নিজে থেকে মিটিং আইডি ক্রিয়েট করতে পারেন না। এটি খুব ভয়াবহ ব্যাপার!!! আপনি চাইলে জুমের ইন্টারনাল চ্যাট অপশন বন্ধ রাখতে পারেন ।
আপনার অগোচরে একজন শিক্ষার্থী আরেকজনের সাথে ক্লাসের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় চ্যাটিং করতে পারে। এতে আপনার ক্লাসের শিখনফল অর্জন হবে না। শিক্ষার্থী ক্লাসে সজাগ আছে কি না? এজন্য আপনি মাঝে মাঝে তাদের ক্যামেরা অন করে রাখতে বলতে পারেন। আপনি যদি এই ফাংশগুলো না বুঝে থাকেন!!! তাহলে কেমন হবে? কারণ আপনার শিক্ষার্থী এগুলো খুব ভালো করেই জানে। আপনার মেইল আইডি দ্বারা আপনি খুব সহজেই জুম মিটিং ক্রিয়েট করতে পারবেন।
গুগোল মিট: গুগোল মিট ব্যবহারের বড় সুবিধা হলো, এটি আলাদা করে ইন্সটলের প্রয়োজন হয় না।। বাংলাদেশের বেশীরভাগ ইন্টারনেট ইউজার মনের অজান্তেই হোক আর জেনেশুনেই হোক গুগোল প্লে স্টোর ব্যবহার করে থাকে ।
আর এই গুগোল প্লে স্টোর ব্যবহারের পূর্ব শর্ত হলো, একটি জিমেইল আইডি দ্বারা তা সচল রাখতে হবে; জিমেইল আইডি আছে মানেই আপনার ফোনেই হোক আর ল্যাপটপ / ডেক্সটোপেই হোক স্বয়ংক্রিয়ভাবে গুগোল মিট থাকবে । আপনি এক ক্লিকেই তা ওপেন করতে পারেন। আপনার সাথে লিংক আপ করা আইডি দ্বারা খুব সহজেই মিটিং বা ক্লাস চালিয়ে নিতে পারেন।
ওয়েবসাইট হ্যান্ডলিং ও ব্লগিং:
এটি একটি বহু পুরাতন শব্দ হলেও আপনার কাছে নতুন শব্দ মনে হতে পারে; আপনার প্রতিষ্ঠানের নিশ্চয় একটি ওয়েব সাইট আছে । সেখানে প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন নোটিশসহ ক্লাসরুটিন প্রকাশ হয়ে থাকে । ওয়েব সাইট আপডেট করে রাখা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে । 21st century teacher skills এগুলো গেলো প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে। এখন আসি আপনার বিষয়ে। আপনার নিজের একটি ওয়েব সাইট থাকতে পারে। আর তা যদি আপনার পোর্টফোলিও হয়, তাহলে আপনার সম্পর্কে সবার আনেক উঁচু ধারণা তৈরি হবে; । আপনি চাইলে ওয়ার্ডপ্রেস থেকে ফ্রি অথবা ব্লগস্পট থেকে ফ্রি ওয়েব সাইট তৈরি করে নিতে পারেন;। যেখানে কোন টাকা পয়সা দিয়ে হয় না । যদিও এই ফ্রি সাইটের মূল সমস্যা হলো ছোট নাম পাওয়া সম্ভব নয়! যেমন আপনি blogspot site খুললে আপনার ডোমেইন নামের শেষে blogspot.com থাকবে। এটি খুব সমস্যা নয়; আপনি শুধু ব্লগিং করবেন মানে লিখবেন যা মনে আসে। আপনি চিন্তা করে দেখেন, একদিন আপনি হয়ত থাকবেন না। কিন্তু আপনার এই সৃষ্টিশীল লেখাগুলো থাকবে।
কমিউনিকেশন দক্ষতা
কমিউনিকেশন দক্ষতা: শিক্ষকতা পেশায় বিভিন্ন দক্ষতার মধ্যে এটি গুরুত্ত্বপূর্ণ, পূর্বে শিক্ষার্থীদের সাথে সামনাসামনি নিয়মিতই দেখা হত কিন্ত করোনা পরবর্তী সময়ে তা আগের মত সম্ভব হবে না; ফলে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা দরকার। তা হতে পারে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে । তবে তা নির্ভর করবে; আপনি তাঁদের কোন প্লাটফর্ম ইন্ট্রুডিউস করাবেন তার উপর। তবে এক্ষেত্রে বিবেচনায় আসতে পারে; কোন প্লাটফর্মে অপেক্ষাকৃত কম ডাটা প্রবাহের দরকার হয় । বিবেচনায় আসতে পারে, কোনটির ব্যবহার অধিক সহজ।
প্রকৃত পক্ষে যত দিন যাচ্ছে আমরা প্রযুক্তির ছোঁয়া আমাদের জীবনকে সহজ থেকে সহজতর করে দিচ্ছে । সহজ জীবনের অনুসন্ধানকারী হলো আমাদের শিক্ষার্থী; যারা সব সময় নতুন কিছু জানতে চাই । তাঁরা ইনোভেশন পছন্দ করে। তারা পুরাতন নিয়ম তথা সিস্টেম ভাংতে ভালোবাসে! নতুন থেকে নবতর জীবনের সন্ধানই তাদের উপজীব্য। আর এই জ্ঞান পিপাসুদের সঠিক পথ পদর্শক হিসেবে প্রথম দায়িত্বটা বর্তায় শিক্ষকদের উপরই। (21st century teacher skills)
কীভাবে MIEExpert শিক্ষক হবেন? সুবিধা কী?
যে ১২টি ওয়েব সাইট সম্পর্কে শিক্ষকদের অবশ্যই ধারণা থাকা দরকার
very nice.